অফবিটখবরলাইফস্টাইল

খেলার জন্য ছেড়েছিলেন পড়াশোনা! হতদরিদ্র বাবা শামির জন্য যা করেছিলেন জানলে চোখে জল আসবে

বুধবার (Wednesday) ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে (Semi Final) নিউজিল্যান্ডের (Newzland) বিপক্ষে প্রতিশোধ নেওয়ার ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেছে ভারত (India)। নিউজিল্যান্ডকে ৭০ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত। মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) একাই ৯.৫ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন। এটি বর্তমান বিশ্বকাপের(World Cup) সেরা বোলিং পারফরম্যান্স, এমনকি বিশ্বকাপের পুরো ইতিহাসে নক-আউট ম্যাচে আর কেউ ৭ উইকেট নিতে পারেনি।

চলতি বিশ্বকাপে তিনবার পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন এই ৩৩ বছর বয়সী ভারতীয় ফাস্ট বোলার। অন্য ইনিংসেও নিয়েছেন ৪ উইকেট। বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলারদের তালিকায় নিজের নামও লিখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী সহ ক্রিকেট বিশ্বের অনেক সেলিব্রিটি তাঁর প্রশংসা করেছেন। এই এতো লাইম লাইটে থাকলেও শামির জীবন কিন্তু আগে ছিল অন্ধকারে।

বিশ্বকাপের প্রথম কয়েকটি ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি মহম্মদ শামি।তবে শামির কণ্ঠে কোনো আক্ষেপ ছিল না। শামি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি শুধু সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। চোটের কারণে হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) ছিটকে যাওয়া ও শার্দূল ঠাকুরের বাজে পারফরম্যান্স তার দরজা খুলে দেয়। একবার সুযোগ পেলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০১০ সালে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি মাধ্যমে অভিষেকের সুযোগ পান উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বাসিন্দা মহম্মদ শামি। যার সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ ইতিহাস। ২০১৪ সালে হাসিন জাহানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক পরিণতি পায়। কিন্তু বিয়ের চার বছর পর হাসিন জাহানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে। ভারতীয় ফাস্ট বোলার তার স্ত্রীকে নিয়ে খুব খারাপ সময় পার করেছেন, যার বিরুদ্ধেও হয়রানি ও বিবাহবিচ্ছেদের গুরুতর অভিযোগ ওঠে! যা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এক সময়।

সম্ভবত এখান থেকেই মাঠের পারফরম্যান্সে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শামি। এই ক্রিকেট খেলার জন্যে দশম শ্রেণীর পর আর পড়া হয়নি মহম্মদ শামির। উচ্চ শিক্ষার জন্য চেষ্টা করলেও মন পড়েছিল ক্রিকেট মাঠে। কৃষক বাবাও আর পড়াশুনার জন্য জোর করেননি। পনেরো বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করলেন তিনি। গুণী ছেলের খেলা দেখার জন্যে কষ্ট করে জেনারেটার কিনেছিলেন গর্বিত এক বাবা!

শামির শৈশবের কোচ মোহাম্মদ বদরুদ্দিনও কথা বলেছেন শিষ্যের সাফল্য নিয়ে। তিনি জানান, ‘তার (শামি) মাঝে সহজাত কিছু প্রতিভা আগে থেকেই আছে, বাকিটা সে অনেক পরিশ্রমে আয়ত্ত করেছে। যা সাফল্যের মঞ্চে তুলে দিয়েছে তাকে। তার ডেলিভারি সবসময় অনেকটা ওপরে থাকে এবং বলও ছোড়া হয় পারফেক্ট অবস্থান থেকে। দারুণ গতির মিশেলে সে অধিকাংশ বলই একই স্লটে ছাড়ে। সে কারণে কোন বলটি ভেতরে আসবে আর কোনটা বাইরে বেরিয়ে যাবে সেটি ব্যাটসম্যানদের বোঝা অনেক কঠিন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button