নদী কখনো সোজা চলতে পারেনা, তার মধ্যে বাঁক আসবেই, তেমনি মানুষের জীবন। বিভিন্ন অভিনেতা অভিনেত্রী অনেক আশা নিয়ে গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে পা রাখলেও তাদের জীবন কিন্তু সবসময়ে মসৃণ থেকেছে তা একেবারেই নয়! সুপারহিট চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সুপারফ্লপ ছবিরও মুখদর্শন করতে হয়েছে কমবেশি সকলকেই। এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু নায়ক-নায়িকাদের কথা ও তাদের কিছু ফ্লপ সিনেমার নাম, তালিকা রইল।
মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty) : বলিউড তথা টালিউডের প্রবীণ অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। আশ্চর্য ফ্যান ফলোইং তার। কিন্তু তার গ্রাফ হিটের চেয়ে বেশি ফ্লপ দেখায়। তবুও তাকে বলিউডের সুপারস্টার বলা হয়। মিঠুন আর্ট হাউস ড্রামা “মৃগয়া” (১৯৭৬) এর মাধ্যমে অভিনয়ে জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি ১৯৮২ সালের ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ (Disco Dancer) চলচ্চিত্রে জিমির ভূমিকায় অভিনয় করেন, যা ১০০ কোটি টাকা অতিক্রমকারী প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র। মিঠুন এখনো পর্যন্ত বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া, ভোজপুরি, তামিল, তেলেগু, কন্নড় এবং পাঞ্জাবি চলচ্চিত্র সহ ৩৫০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তবে, প্রকাশিত একটি খবর অনুসারে, মিঠুন তার ক্যারিয়ারে ১৮০টি ফ্লপ ছবি দিয়েছেন। তার ব্যর্থতার হার প্রায় ৬০%। তিনি ১৯৯৩-৯৮ সাল পর্যন্ত টানা ৩৩টি ফ্লপ সিনেমা করেছিলেন। মিঠুন বলিউড অভিনেতাদের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন, যিনি সবচেয়ে বেশি ফ্লপ ছবি করেছেন।
সানি দেওয়াল (Sunny Deol) : একটা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তিনি প্রায় ১০৬ টি ফ্লপ সিনেমা প্রদান করেছে ইন্ডাস্ট্রিকে। পর পর ১৯টি ফ্লপ সিনেমা সত্ত্বেও তিনি থামেননি, তাই সারা বিশ্ব টাকে এক নামেই চেনেন। অনুরাগীরা অপেক্ষা করে রয়েছে তার গাদার ২ সিনেমার জন্যে।
অক্ষয় কুমার (Akshay Kumar) : অক্ষয় কুমারের কেরিয়ারের শুরুটা ভালো হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৬-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পর পর ১৪টি ছবি ফ্লপ করে, প্রায় মাঝপথে ডুবে যেতে বসেছিলেন। কিছু কম বাজে কথা তাকে শুনতে হয়নি। সবার কাছে নিজেকে হাসির খোরাক বানিয়ে ফেললে কী আর সিনেমা হিট করবে? দর্শক কেন দেখবে অক্ষয় কুমারের ছবি?..” মারাত্মক আক্রমণ বলিউডের খিলাড়িকে। মাঝখানে ১৩ টি পরপর ফ্লপ ছবি দিয়ে তিনি অভিনয় থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে হাসির মোড়কে জড়িয়ে দর্শকের সামনে আবার ফিরে আসেন তিনি।
অজয় দেবগন (Ajay Devgan) : তার ক্যরিয়ারে শুরুর দিকে সমালোচকদের অনেক ভালোবাসা অর্জন করলেও একটা সময় একের পর এক ১৫ টি ফ্লপ সিনেমাও তার ঝুলিতে তিনি পুরে রেখেছেন। কিন্তু ভেঙে যাননি। সফলতার সাথে ব্যর্থতাটাও আপন করে নিয়েছেন তিনি।
অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) : ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত টানা ১১টি ফ্লপ ছবি করে কেরিয়ার শুরু অমিতাভ বচ্চনের। এরপর ‘জঞ্জির’ এর মতো সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করে তাঁর ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায়। বলিউডে তিনি বিগ বি বলেই পরিচিত। তাকে চেনেনা এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা হবে।
কারিনা কাপুর (Karina Kapoor) : করিনা কাপুরের ইন্ডাস্ট্রির শুরুর দিকের জার্নি মসৃন ছিলোনা। ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ১০টি ব্যাক-টু-ব্যাক ফ্লপ ছবি তিনি তার অনুরাগীদের দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবার তিনি কাজ করেন আর নিজের পায়ের তোলার মাটি শক্ত করে ফিরে আসেন বলিউডে ‘আরিতাজ’ সিনেমার মধ্যে দিয়ে কামব্যাক করেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা চোপড়া (Priyanka Chopra) : ২০০৪ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মোট নটি সিনেমা ফ্লপ হয় অভিনেত্রীর। কিন্তু তারপরেও তিনি ভেঙে যাননি বা পিছিয়ে যাননি। নিজের ইচ্ছা দিয়ে তিনি ক্রমাগত কাজ করে গেছেন। আর তাই আজ বলিউড থেকে এখন তিনি হলিউডও মাতাচ্ছেন। প্রিয়াঙ্কা যেন হার না মানার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
জিতেন্দ্র (Jitendra) : সুপারস্টার জিতেন্দ্র একসময় তার অভিনীত পরপর আটটি সিনেমা ফ্লপ হয়েছিল। যদিও সেই দুঃসময় তিনি খুব তাড়াতাড়ি কাটিয়ে উঠেছিলেন। এবং নিজের সময়কালে বাকি সিনেমা গুলিতে তিনি অপারগ আনন্দ প্রদান করেছেন দর্শকদের। একনামে তাকে আজও অনুরাগীরা মনে রেখেছেন।
Leave a Comment